গরীব ছেলের প্রকৃত ভালোবাসা ।।



লেখক : মো তামিম 

তামিম : ভালোবাসো আমায় ??

স্নেহা : হুম ।। কতবার বলবো একটা কথা ।।

তামিম : তাহলে অবহেলা করছো কেনো আমায় ??

স্নেহা : অবহেলা করলাম কোথায় ।।

তামিম : যদি অবহেলা না করতে তাহলে আজ ১০ বারের বেশি ফোন করার পরও ওয়েটিং পেলাম কেনো ??

স্নেহা : আরে বাবা তুমি ছাড়া তো আমার পরিবার আছে তাই না ।। তাদের সাথেও তো আমার যোগাযোগ করতে হয় ।।

তামিম : তাই বলে রাত ১ টার পর ।। এটা কেও বিশ্বাশ করবে স্নেহা ।।

স্নেহা : দেখো ফালতু কথা বাড়িও নাতো ।। আমার যখন যা খুশি তাই করবো তাতে তোমার কি ??

তামিম : স্নেহা আমি তোমায় ভালোবাসি ।।

স্নেহা : ভালো তো বাসো ।। ভালোবাসো বলেই কি আমায় কি কিনে নিয়েছো ??

তামিম : ছি কি বলছো এসব ।। 

স্নেহা : যা বলার তাই বলছি ।। তুমি যাও তো এখান থেকে ।।

তামিম : ঠিক আছে চলে যাচ্চি ।। আর হ্যা বাড়ি থেকে টাকা পাটালে ফোন করতে পারি ।।যদি সম্ভব হয় কথা বলো ।।

স্নেহা : তুমি কি চলে যাবে ।।

তামিম আর কিছূ না বলে লজ্জায় মুখ নিচু করে চলে গেলো ।। এই সেই স্নেহা যার জন্য বাড়ি থেকে টাকা পাঠালে তার খরচের অর্ধেক টাকা স্নেহার পেছনে খরচ করতো ।।কত কিছুই না করতো স্নেহার জন্য ।। বাকি টাকা দিয়ে কোনরকম চলতো ।। কখনো একবেলা খেয়ে বা না খেয়েই ।। তামিম শুধু এটাই চাইতো তার ভালোবাসার মানুষ যেনো ভালো থাকে ।।কিছুদিন যাবৎ তামিমের পারিবারিক সমস্যার কারণে বাড়ি থেকে টাকা পাঠাচ্ছে না ।। যার কারণে স্নেহার পছন্দের টেডি বেয়ারটা কিনে দিতে পারলোনা ।। সত্যিইতো তমিমের কি দোষ ।। গালফ্রেন্ড এর চাওয়া পাওয়া টুকু যদি মেটাতে না পারে তাহলে ভালোবাসতে গেলো কেনো ।।রাতে টাকা পেয়ে স্নেহাকে ফোন করলো ।।

তামিম : হ্যালো স্নেহা 

স্নেহা : হ্যা বলো ।।

তামিম : কাল দেখা করতে পারবে ??

স্নেহা : পারবো না কাজ আছে আমার ।।

তামিম : শুধু ১০ মিনিট হলেই হবে ।। 

স্নেহা : কোথায় আসতে হবে ??

তামিম : তোমাদের বাড়ির সামনে যে পার্ক্ টা আছে ওখানে আসলেই হবে ।।

স্নেহা : ঠিক আছে রাখছি ।।

পরেরদিন যথাসময়ে দুজন পার্কে হাজির ।।

স্নেহা : কি বলবে বলো ।।

তামিম : আগে চোখ বন্ধ করো ।।

স্নেহা : এত্ত ঢং কোথায় পাও তুমি ।।

তামিম : আহ করো না ।।

স্নেহা : ঠিক আছে করলাম ।।

তামিম : শুভ জন্মদিন স্নেহা (বড় টেডি বেয়ারটা সামনে দাড় করিয়ে)

তামিম এর এসব কান্ড দেখে স্নেহা হাসতে লাগলো ।।সাথে তামিম ও ।।

স্নেহা : ওয়াও কি সুন্দর !! কোথায় পেলে তুমি ??

তামিম : দোকান থেকে কিনে এনেছি ।। আমার স্নেহার পছন্দের জিনিস আমি দেবোনা তা কি হয় ।।

স্নেহা : এত্ত ভালোবাসো আমায় ??

তামিম : হুমম ।। খুব খুব খুব ভালোবাসি ।।

স্নেহা : সত্যিই তোমার মতো ছেলে কয়জনের ভাগ্যে জোটে ।।

তামিম : আচ্ছা ১০ মিনিট হয়ে গেলো আমি যাচ্ছি ।। কখনো যদি আমার কথা মনে পরে তাহলে এই টেডি বেয়ারটার সাথে কথা বলে নিও ।। 

কথা গুলো বলেই তামিম হাটা ধরল ।। স্নেহা টেডি বেয়ারটা পেয়ে খুশিতে বাড়ি চলে গেলো ।। রাতে ফেসবুকে লগ ইন করতেই স্নেহা দেখে তামিমের আইডি ডিএক্টিভ ।। ফোন করতে লাগলো ।। কিন্তু ফোন নাম্বার ও বন্ধ ।। স্নেহার খুব চিন্তা হচ্ছে তামিমের জন্য ।। হঠাৎ তামিমের রুমমেট তুষারের কথা মনে পড়তেই তাকে ফোন দিল || 

স্নেহা : হ্যালো ভাইয়া তামিম কোথায় ওকে ফোনে পাচ্ছিনা কেনো ??

তুষার : ওর ম্যাচ ভাড়া বাকি চিলোতো তাই ওকে বাইর করে দিয়েছে ।।

স্নেহা : এখন ও কোথায় ??

তুষার : আছে হয়তো আসে পাশে কোথাও ।। বাড়িওয়ালা ভাড়া আদায় করার জন্য ওর কোনো কাপড় চোপড় ও নিয়ে যেতে দেন নি ।।

স্নেহা : ওহ আচ্ছা ।।

কথা গুলো শুনার পর স্নেহা কেদেই দিল ।। যে মানুষটা নিজের ভালোবাসার মানুষকে সুখি দেখার জন্য এতো কিছু ত্যাগ করলো তার জন্য কিছুই করতে পারছে না ।। বরং দিনের পর দিন কষ্ট দিয়ে গেছে ।।এসব ভাবছে আর কাদছে ।। তুমি এমন কেনো তামিম ।। একবারও আমাকে বুঝিয়ে বললে না ।। আমি কি এতই নিষ্টুর ছিলাম ।। আমি ও তো তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসি ।। হঠাৎ ফোন বেজে উঠতেই হুশ ফিরল স্নেহার ।।

স্নেহা : হ্যালো ।।

তামিম : রাতের খাবার খেয়েছো ।।

স্নেহা : তামিম তুমি এখন কোথায় ।। (কেদে কেদে)

তামিম : এই তো বাসায় আছি ।। কেনো বলোতো ??

স্নেহা : মিথ্যা বলছো কেনো ?? তুমাকে নাকি বাসা থেকে বের করে দিয়েছে ??

তামিম : কে বলেছে এসব ।।

স্নেহা : যা জিজ্ঞাসা করছি তার উত্তর দাও ।।

তামিম : হুম ।। তোমাকে এগুলো নিয়ে টেনশন করতে হবে না ।। আমি ঠিক সামলে নেব ।।

স্নেহা : তুমি আমাকে ছাড়া সব সামলে নেবে তামিম ।।

তামিম : নাহ ।। আসলে তোমাকে ছাড়া তোমাকে কল্পনাও করতে পারিনা ।।

স্নেহা : তাহলে যা বলছি মন দিয়ে শুনো ।। তোমার নাম্বারে এক্ষনি টাকা পাঠাচ্ছি তুমি এগুলো বাড়িওয়ালাকে দিয়ে রুমে যাও ।।

তামিম : তুমি কেনো টাকা দেবে ।। বললাম না আমি ঠিক সামলে নিব ।।

স্নেহা : যা বলছি তাই করো ।। 

তামিম : আচ্ছা ।।

স্নেহা : শুনো ।।

তামিম : হুম বলো ।।

স্নেহা : সরি ।।

তামিম : সরি কেনো ??

স্নেহা : আর এমনটা হবে না ।।

তামিম : পাগলি মেয়ে ।।

স্নেহা : অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায় ।।

তামিম : আমি তার ছেয়েও বেশি ভালোবাসি ।।

স্নেহা : না দুজনেই সমান সমান ।। হিহিহি ।।

এভাবেই চলতে লাগলো এক সুখের ভালোবাসার জুটি ।। আসলে ভালোবাসার মানুষটাকে বুঝতে পারার মধ্যেই সকল ভালোবাসা নিহিত ।।ভালোবাসার মানুষটার সকল চাওয়া পাওয়া,, সুসময়- দুসময় সবটাই একসাথে আতিবাহিত করাই প্রকৃত ভালোবাসা ।। অবষেশে ভালো থাকুক ভালোবাসার মানুষগুলো ।।

Comments

Popular posts from this blog